পৃষ্ঠাসমূহ

দেহাত্ববোধক কবিতা


আদমশুমারী

শহরের মত
গাঁয়ের মেয়েরাও যায় পার্লারে
মেক-আপ করে ও করায়
তারপর সম্ভ্রান্ত পথে হেঁটে
ঘেমে ও ঘামিয়ে প্রথাগত হয়ে যায়।

আমরা তারও হিসাব রাখি!

হেডম্যান

বিরাট অসঙ্গতির পর_
তুমি যাকে হেডম্যান নামে ডাকতে
দেখলে_ প্রকৃতিজুড়ে সন্ধ্যা হলে
তারও মাথা নত হয়_
প্রথাগত ঝিলের কাছাকাছি।

হাতঘড়ি

হাতকে ধরে থাকা ঘড়ি
নারীকে ধরে থাকা শাড়ী
_দুটো এক নয়।
তবুও দেখো_
প্রয়োজনে দুটোকেই খুলতে হয়।

সেলাইমেশিন

সেলাইমেশিন সর্বদাই রহঃ সহঃ নীতিতে বিশ্বাসী।

গতবারের সেলাই শেষে
দর্জি তার মজুরি পেল এ বছর।

ক্যালকুলেটর

মুদিঅলা আঙুলের কাজ ভাল পারে
মাস শেষে হিসাবের খাতা যায় গৃহিনীর ঘরে।

হ্যান্ডিক্রাফ্ট

অনেকণ তাকিয়ে ছিলাম জলের দিকে
জল; না-না তার আধারের দিকে
ভিজব ভিজব করছি অথবা ভাবছি_
তখন আধার বাধা দিল।
সেই থেকে বাঁধা পড়েছি নিজ বাহুডোরে
ভিজি এবং ভিজাই কিন্তু জলে নামি না।

প্রজনন

অন্ধকার বাণিজ্য করছে
আদিমতা কিনে নিয়ে
বিক্রি দিচ্ছে শৈলপাঠ।
আমরা অত্যন্ত যত্নে
নিজেদের নাম খোদাই করছি।

সব প্রস্তুতি ও আয়োজন শেষে
যখন কাজ সেই সময়ের মত শেষ হয়

প্রাণিবিদ্যার প্রজনন চ্যাপ্টার মোতাবেক
(সামাজিক দলিল ও লোকচুর সাীর ঝামেলা পেরিয়ে)
পাঠ নিতে শিখি গৃহস্থালী জীবনের।
সেখানে, লবণাক্ততার পর্ব শেষে
অপোকে দশ মাসের স্থায়িত্বে পৌঁছানোর কান্ত মুর্হুতে_
মুখ থাকে চিবুকের পাশে।
আর প্রজনণের হাতিয়ারটা আপাতত বিশ্রামে যায়।

দৌড়

আটতলা বিল্ডিং থেকে একবার
প্যান্থারের প্যাকেট নিচে পড়েছিল,
দেখে ভেবেছিলাম;
প্যান্থারেরা এত উপড়ে উঠে যায়!
আজ ষোলতালা থেকে নামতে নামতে ভাবছি
প্যান্থারেরা কত নিচে থাকে!

সংপ্তি কার্য বিবরণী

শাস্ত্র মতে, বিড়াল মারার রাতে
দ্বি-পয়ি চুক্তিতেই দীর্ঘ হয় রাত।
কম্পিত করতলে আগামীর স্বপ্ন রেখে
স্বপ্নমাখা হাত তখন সরিয়ে নেয়_
এক একটি পৃথক বিভাগের
বিভিন্ন বয়সে প্রাপ্ত_ বাঁধাসমূহকে।

তারপর খাটের একটা পরীা চলে
ঝড়-তোফানে টিকবে কেমন!

স্বপ্নে, মৎস্যকন্যা

স্বপ্নে কেবল নৌকাবাইচ
মাঝ রাতের নবজাতক ঘুম
দৃশ্য সপে দেয় মাঝির হাতে
মাঝি দেখে_
নদী জুড়ে জলীয় শ্যাওলা
তার ফাঁকে কয়েকটি মাছ।
মাছেদের প্রসঙ্গ এলে_বিবিধ প্রসঙ্গ আসে।

লোকাচার

পাতালপথ পাতালেই থাকা স্বাভাবিক
এই স্বাভাবিকতার সাথে প্রশ্নচিহৃ যোগ করে
আমরা তারও লিঙ্গান্তর ঘটাই।

ঘটিয়ে, ঘরে_ ঘরের বাহিরে
বাস্তবস্বপ্নে কত কী ভাবি!

ছায়ানৃত্য

পুরুষ মানুষ আজকাল ভেজা বেড়ালের মত
মাছটি উল্টিয়ে খাওয়ার সূত্র
উল্টিয়ে দিয়েছে। আমি এই কথা
তোমার ডানের রমণীয় কানে বলতেই তুমি
ডান হাতটা আমার এক ঝটকায় সরিয়ে দিলে_
কোমরের ফিতা থেকে।
রিঙ্াওয়ালা কিছু না বুঝে গান ধরে_
_ লোকে বলে আমার ঘরে নাকি...
আমি কি আর বসে থাকতে পারি?
হাতগুলোর সাথে সাথে ঠোঁটগুলোও এবার_
ব্যস্ত হয়ে রিঙ্ায় বসেই দেখল
পাশের রাস্তায় পাশাপাশি যাচ্ছে কি অদ্ভূত ছায়ানৃত্য

সিলেবাস

লাল কালি দিয়ে লেখা প্রথম অধ্যায়ের জন্যই
শিক-শিকিা বিরতি দিলেন প্রায়
তিনোধিক দিন।
শষ্যের মৌসুম এক সময় আসবেই...

শিক-শিকিা, ছাত্র এবং ছাত্রীকে
ব্যবহারিক ও তাত্তি্বক মিলিয়ে
সৃষ্টিতত্ত্বের সাধারণ নিয়মে
পাঠ শিখালেন অ, আ থেকে ঐ আহ্ পর্যন্ত।

পাঠ শেষে অভিজ্ঞতার মাপকাঠিতে
আগামীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে দুজনই
পড়ে গেলেন ধাঁধায়!

স্বপ্ন বিষয়ক জটিলতা

এমনও হয়!
মাঝরাতে নিদ্রাদেবীর কোল থেকে নেমে
তাকেই কোলের উপর বসাতে হয়।
বেশী কিছু না হলেও অর্প কিছু হয়!
তারপর দিনের শুরুতে শাওয়ারের নীচে
ভালো সময় দাঁড়াতে হয়!

জলীয় আলপনা

দেহের পসারী নিয়ে মাদুরে বসে
সরু চোখে দেখা পাশের জ্বলন্ত মানবী।

পদযুগলের দূরত্বহীন স্থানে
কত হয়েছে আনাগোনা।
রক্তের দসু্যতার কাছে হার মেনে; উতলা নদীতে
দ্রুতলয়ে টেনেছ বৈঠা।
শেষে, লবণাক্ত শরীর নিয়ে
ঢলে পড়েছ রহস্যঘেরা তীরে।

মাংসল ভূমিতে আঁকলে বুঝি জলীয় আলপনা!


সাময়িক বিরতি

চাষিতে আমি চাই যে ভূমি
চাষ বড় প্রয়োজন!
অনাবাদি! না থাকতে দেয়া যায় না
ভূমিই যে করে এমন আকর্ষণ!

চাষাবাদের ষোলকলা জানি আমি
আমি? আমি এখন অভিজ্ঞ চাষী।
লাঙ্গল জোয়াল নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তেই
ভূমি বলে_ এখন মৌসুমের ক্রান্তিকাল
রহঃ রহ কিছুটা সময়, আগামী পরশু কাল!

সন্ধি

ভাদ্রমাসের লালনায় উত্তপ্ত শীতকাল
কানামাচির নিম্নাঙ্গের পট্টি উড়িয়ে
শরতের কাশবন উদ্ভোধন।

আহাঃ পাহাড়ি পথে এগোতে গিয়ে
শীতকালেও শ্বেদজল গড়িয়ে পড়ে- অহেতুক
ষড়ঋৃতুর দেশে নবীন পর্যটকের আর্বিভাব নিশ্চিত করে_
ঋৃতু বৈচিত্র ভুলে যাওয়া।

৩৬-২৪-৩৬

সাবালক হাতের দসু্যতায়
দুলতে থাকে জোড়া টুপির নিয়ন্ত্রিত জিনিসগুলো।
চলমানতার সূত্র মুখস্থ করে
পিটুইটারী গ্রন্থির ঈশারায়
হাত ছুটতে থাকে এক অচেনা শহরে।
শহরের গলির নাম্বার বড় অদ্ভুত!
ছত্রিশ থেকে শুরু হয়ে বার কমে
আবার পূর্বের নাম্বারে যায়।