পৃষ্ঠাসমূহ

বিসর্জন পর্ব

বিসর্জন পর্বঃ এক

জীবন; সে তো ট্র্যাফিক সিগন্যাল
সবুজ সংকেত জ্বললেও
অপেক্ষায় থাকে-
লোমশঃ হাত নেমে যাবার।
তারচেয়ে বরং জলকাব্য লেখি
স্রোতঃ ফেলে আসা অতীত
তারল্যের উচ্ছ্বাসে তটস্থ পাড়।
কান্নালিপি বালুচরে নয়
বালুচর প্রতারক, খড়িমাটি ভুলোমনা
তারচেয়ে বরং লিখে রাখি নয়নপাত্রে।



বিসর্জন পর্বঃ দুই


গিরি-খাদে পরিত্যাক্ত লালসা সকল
অহেতুক স্বপ্ন হয়ে যায়
মাটি ও আকাশ প্রসঙ্গ ভুলে
মূক ও বদিরতার দেয়ালে
আল্পনা আঁকে_ যুগলবন্দি।
যুগলচিন্তা সাথী হারায় চতুর সময়ে
আজকের বাজারে সর্বোচ্চ ক্রেতা
স্বপ্ন কিনে নেয় সৌখিন দামে।


বিসর্জন পর্বঃ তিন


সমান্তরালের গান
আজো শিখা হল না আমার
শুধু বামুন আর চাঁদের গল্প মুখস্থ করেছি
ফলাফল অসমাপ্ত ভাগশেষ।
আর ঐ আমার সাথে সাথে
যে ভাগশেষের শেষে পড়ে রইল
সেও জানলো-
মাঝি অল্প বয়েসি হলে
আকাশের খবর তেমন একটা রাখে না
মনের খবর ছাড়া।


বিসর্জন পর্বঃ চার


ক্যালেন্ডার ঝুলে আছে
তারিখগুলো_ দিনগুলো_ মাসগুলো_
রেখাবন্দি থেকে মুক্তি পাচ্ছে।
বুঝতে পারছি_
আমাকেও মুক্তি দিচ্ছে কেউ
হার্ডবিট, শ্বাস-প্রশ্বাস, অনুভূতি ও স্পর্শ থেকে।


বিসর্জন পর্বঃ পাঁচ


সাদৃশ্য বজায় রেখে সূত্রসন্ধি
বিবর্তিত হতে হতে_
হয়ে যাচ্ছি ভুলে যাওয়া তক্ষক।
সন্ত বলেছিল, বৃষ্টি আসলে
কোন এক মজবুত ঘরে আশ্রয় নিবি।
সেই ঘর খোঁজে আজো বৃষ্টিকে
ডাকতে পারছি না করিডোরে।
স্পর্শগুণ হারিয়ে ক্রমেই-
হয়ে যাচ্ছি আশ্চর্য গন্ধমানব।


বিসর্জন পর্বঃ ছয়


মেঠোপাখি উড়ে যাবে
ডানার আয়োজন দেখে
অংক মিলাতে বসে পরিত্যাক্ত সনদ।

সনদ; ডানারা এমনই হয়
রোদের গন্ধ মুছে, স্মৃতিঘর ডিঙ্গিয়ে
অবশেষে জীবন দা'র কবিতায় মিলায়।


বিসর্জন পর্বঃ সাত


কান্নাপর্বে মেঘগুলো বিস্ময় পাহাড়
থেমে থাকা জল
ছুটতে থাকে পাহাড়ী ঝর্নার মত।
অভিযুক্ত সিন্ধুমাঝি
সেই জলেরই ছুটে চলা দেখে।

প্রেমঃ আজো মধ্যবিত্তের হল না!



বিসর্জন পর্বঃ আট


রুগ্ন ক্যানভাসে সতেজ শিল্প
অসহায় আয়োজন।
পড়ে থাকা প্যাকেটবন্দি নিদ্রাসমগ্র
এক একটি সঙ্গী হয়েছে জলের।
তবুও অবুঝ প্রত্যাশাগুলো
ঘন্টা শুনে শেষ রাতের।
শেষ রাত; তুমিও আমার মত
প্রেমিক ছিলে বুঝি!


বিসর্জন পর্বঃ নয়


মধ্যরাত শব্দ তুলে কৌতুহলে জানতে চায়
স্বপ্নবুনণ কী থেমে আছে সুতো সংকটে?
তার প্রেক্ষিতে উত্তর আসে-
বুনণ যন্ত্র হারিয়ে গেছে সুতোসহ
বৈশ্বিক বাজারে।



বিসর্জন পর্বঃ দশ


খেলা থেমে গেছে
ঘরে ফিরে যাও পলাতক প্রেম
ঘাসের ডগায় শিশির বালিকা
বহু দেখেছো চশমা পড়া চোখ
এবার মধ্যস্থতার ব্যবধান জেনে
পড়তে শিখো বিরহের নামতা।

রাত জাগা হলুদ পাখির গানে
সূর্যসঙ্গমে অভ্যস্থ হও
তুমি বরং কবি হও