পৃষ্ঠাসমূহ

বিষয় ভিত্তিক নাটক: ‘দূরে গেলে ভুলে যাবে’

আজ দেশ টিভিতে দেখা যাবে হবিগঞ্জের স্বরূপ আনন্দের ‘দূরে গেলে ভুলে যাবে’

আজ শুক্রবার রাত পৌণে ১০টায় দেশ টিভিতে প্রচারিত হবে হবিগঞ্জের উদীয়মান পরিচালক স্বরূপ আনন্দ পরিচালিত প্রথম নাটক ‘দূরে গেলে ভুলে যাবে’। মিরন মহিউদ্দিনের রচনা ও আউটফ্রেমের প্রযোজনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার, ফারহানা মিলি, ইফতেখার রাসেল, ফরহাদ লিমন, সন্দীপ বিশ্বাস প্রমূখ।
‘আজ সাত বছর ধরে ছুটছি, সেই অমোঘ ফতোয়া কানে নিয়ে দূরে গেলে ভুলে যাবে।’ কবি সুমন আজাদ, অভিমানে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে নিজের কবিতার জগত থেকে। আর তারই এক সময়ের সাহিত্যসঙ্গী, ভবিষ্যত নিরাপত্তা আর আর্থ-সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে কবিকে ছেড়ে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হাসান চৌধুরীকে। স্বামীর আর্থিক সামর্থ্য ও নিজের মেধায় আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে লেখক কেয়া চৌধুরীর। এক সময় অপরিচিত এক প্রকাশকের পরামর্শে খ্যাতির মোহ পেয়ে বসে তাকে। শুরু করে নিজের স্মৃতি নিয়ে ত্রিভুজ-প্রেমের উপন্যাস। কিন্তু নিজের এই সিদ্ধান্ত এক সময় ক্ষত-বিক্ষত করে তাকে। কেয়ার সামনে এক এক করে আসতে থাকে নিজের ভুল ও অন্যায়। যার ভাবনায় সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মনে হয় তার ভালবাসার মানুষ ও সে সময়ের প্রতিভাবান কবি সুমনের কথা। যে তার কথা মেনে নিয়ে ৭ বছর আগে নীরবে হয়েছে নিরুদ্দেশ। খুন হয়েছে সুমনের কবিসত্ত্বা। কেয়া জানে না সে কোথায়? কিন্তু আজ তার মনে হয় সবখানে সুমন দাঁড়িয়ে আছে, কথা বলছে কখনো ভেতরে, কখনো বাইরে থেকে। এখন কেয়ার সামনে শুধুই অনিশ্চয়তা। এর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যায় কেয়া চৌধুরীর দ্বন্দ্বময় জীবন ও নতুন উপন্যাসের কাহিনী নির্মাণ।
উল্লেখ্য, স্বরূপ আনন্দ হবিগঞ্জ শহরের পিটিআই রোডস্থ স্বদেশ রঞ্জন রায় চৌধুরীর পুত্র।



নিউজ লিংক

''পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার অপরাধে প্রেমিকের গোপন অঙ্গে ইট বেধে শাস্তি দিলেন চেয়ারম্যান''

শিরোনামটা পড়ার সাথে সাথে যে বিষয়টা মাথায় আসবে তা হল এ কোন দেশে বাস করছি আমরা? প্রচলিত আইন মেনে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়ে কোর্টম্যারেজ করেছে। তারপর তাদের পরিবার সেই বিষয়টা মেনে নিয়েছে যার কারণে তারা ঘরে ফিরে গেছে। সেখানে চেয়ারম্যান কে তাদেরকে শাস্তি দেয়ার? পত্রিকায় নিউজটা পড়ার পর আমি হতবাক হয়ে গেছি! পত্রিকার উপর বিশ্বাস না করে আমি সেই এলাকায় ব্যক্তিগত ভাবে খুজ নিয়ে সত্যতা যাচাই করেছি। সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে যা জানলাম তা আরো ভয়াবহ! এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, চেয়ারম্যান বিচারের নামে ছেলের উপর নির্যাতন করেছে এবং মেয়েকেও সবার সামনে উলঙ্গ করেছে। কি আশ্চর্য্য! চেয়ারম্যান কেনো এমন করবে? তার সমস্যা কি? তার নির্বাচিত এলাকায় কি প্রেম করে বিয়ে করা নিষেধ নাকি? সেখানে কি তার রাজত্ব চলে? তার আইন সবাইকে মানতে হয়? বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে চললে নজরুল চেয়ারম্যানের কি নিজস্ব আইন ভঙ্গ হয়?

এখান থেকে নিউজটা পড়তে পারেন
নিউজটা পড়ে এবং খোজ নিয়ে যা জানলাম তার প্রেক্ষিতে নজরুল চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমার যে ধারণা হচ্ছে তা হল:

এক. চেয়ারম্যান মানুষিক সমস্যাগ্রস্থ।
দুই. আতংকের মাধ্যমে নিজের আধিপত্ত বিস্তার।
তিন. মেয়েটির প্রতি তার আকর্ষণ।
চার. মৌলবাদীদের দালাল: ফতোয়া চালু করার চেষ্ঠা

নজরুল চেয়ারম্যান যদি মানুষিক সমস্যাগ্রস্থ না হত তাহলে সে এমন শাস্তি কেনো দেবে? স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় চেয়ারম্যানের হাতে এলাকার সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা দেয়া হয়। কিন্তু তার বিচারের এবং শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা তাকে কে দিলো? বাংলাদেশের কোন বিচার ব্যবস্থায় আছে পালিয়ে আইনগত ভাবে বিয়ে করলে তার জননাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে দিতে হবে? মৌলবাদীদের ফতোয়া প্রথার চেয়েও ভয়াবহ প্রথা চালু করতে চাওয়া মানুষিক বিকৃতির লক্ষণ ছাড়া কি হতে পারে? আর যে মানুষের মস্তিস্ক কাজ করে না, তার বিচার বিবেচনা লোপ পেয়েছে বলে মনে হয় সে কিভাবে একটা এলাকার কার্যভার নির্বাহ করবে?

নজরুল চেয়ারম্যানের কর্মকান্ড দেখে মনে হচ্ছে সে তার নির্বাচিত এলাকায় আতংক সৃষ্ঠি করতে চায়। তার বিচারিক আতংকের মাধ্যমে নিজেকে এলাকার নতুন গডফাদার হিসেবে স্থাপন করতে চায়। যার জন্য সে বেচে নিয়েছে আপাতত গরীব ঘরের ছেলেমেয়েকে। যাদের উপর নির্যাতন করলেও তারা প্রতিবাদ করার সাহস পাবে না আর অন্যকেউ প্রতিবাদও করবে না। নজরুল হয়তো ভেবেছে আপাতদৃষ্টিতে ছোট একটি সংবাদ যা স্থানীয় পত্রিকায়ও আসবে না। সমাজের সচেতন মানুষ জানবে না। কোনো বড় পত্রিকায় এ নিয়ে কিছু লিখা হবে না। সে তার নিজস্ব বিচার ব্যবস্থা চালু করতে পারবে নিজের এলাকায় সদম্ভে। হয়তো নজরুলের আরো অনেক অমানুষিক বিচার ও কর্মকান্ড আমরা জানি না পত্রিকায় আসেনি বলে। তাই সে নিজেকে ধীরে ধীরে গডফাদার ভাবতে শুরু করেছে।

আমি তার সম্পর্কে জানতে গিয়ে জেনেছি সন্তান হয় না এই অপরাধে সে নাকি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর। কাপড় খুলে ছেলেমেয়েকে শাস্তি দেওয়ার পিছনে কি চেয়ারম্যানের যৌন অভিপ্সা চরিত্রার্ত করার কোনো কারণ ছিল? চেয়ারম্যান ছেলের জননাঙ্গে ইট ঝুলিয়ে কি প্রমাণ করতে চেয়েছে? সে কি মেয়েটিকে শরীরিক বা মানুষিক ভাবে চেয়েছিল? তাই সে ছেলেটিকে এই শাস্তি দিলো? পত্রিকায় আসেনি কিন্তু জেনেছি মেয়েটিকে উলঙ্গ করা হয়েছিল। কিন্তু কেনো? চেয়ারম্যানের কোন উদ্দেশ্য চরিত্রার্ত করার জন্য মেয়েটিকে বিবস্থ করা হলো? কি উদ্দেশ্যে এই বিচার করেন চেয়ারম্যান?

বাংলাদেশ থেকে যখন কুসংস্কার, ফতোয়াপ্রথা, অন্ধবিশ্বাস বিদায় নিচ্ছে তখন কে এই নজরুল চেয়ারম্যান যে কিনা আদিম বিচার ব্যবস্থা চালু করতে চায় তাও আবার বিনা অপরাধে? সে কোন মৌলবাদীদের দালাল হয়ে কাজ করছে বিচারের নামে অমানুষিক এবং মানবাধীকার লঙ্গনের মত বিচার করে? নজরুলদের হাত কতটা উপড়ে থাকলে সে মিডিয়াকে মানা করতে পারে নিউজ না ছাপানোর জন্য? একবার নিবার্চিত চেয়ারম্যান হয়ে সেকি ভেবে নিয়েছে তাকে আর কেউ কিছু করতে পারবে না? প্রচলিত আইন মেনে যারা বিয়ে করেছে তাদেরকে সে তার আইন মত শাস্তি দিয়ে কি বাংলাদেশের প্রচলিত আইনের বিরোধী সে করেনি? একজন চেয়ারম্যান যদি বাংলাদেশের আইন না মেনে নিজের আইনের প্রচলন করতে চায় তাহলে কি আদালত অবমাননা করলো না? যেখানে ছেলে আর মেনে বৈধভাবে আইন মেনে বিবাহ করেছে?

নজরুলের মত সদ্য গজিয়ে উঠা আগাছাদের এখনই থামাতে হবে। তারা সমাজের উচু আসনে থেকে সমাজের অন্ধকার বিকাশে ভূমিকা রাখে। আজ একটি খবর প্রকাশিত হওয়ায় আমরা নজরুলদের বিচার, নজরুলদের কর্ম জানতে পারলাম। কিন্তু এমন অনেক খবর অন্তরালে থেকে যায়। আর এই সুযোগে নজরুলরা আগাছা থেকে বিষবৃক্ষে পরিনত হয়।

ক্রসফায়ার, গনপিটুনি এখন গুপ্ত হত্যা; বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা কোন পথে?

ক্রসফায়ার এর পর যে হত্যাকান্ড নিয়ে বাংলাদেশীদের চিন্তার কারণ রয়েছে তা হল গুপ্তহত্যা বা গুম করে দেয়া। গুপ্ত হত্যা কি? গুপ্তহত্যা বা গুমখুনের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য থাকলেও “ফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্স” বা কাউকে অদৃশ্য করে দেয়ার কৌশলটি লাতিন আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ে গত শতকের সত্তর দশকে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী, “ফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্স” বা কাউকে অদৃশ্য করে দেয়ার ঘটনাটি তখনই ঘটে, যখন:
রাষ্ট্র বা কোন রাজনৈতিক সংগঠন অথবা তাদের কোন একজনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদপুষ্ট কোনো তৃতীয় পক্ষ যখনই কাউকে বলপূর্বক গোপনে ধরে নিয়ে যায় এবং আটকে রাখে, এবং সে বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রদান করে না, যাতে করে আটকে থাকা ব্যক্তি আইনের আশ্রয় নিতে পারে। [উইকিপিডিয়া, ফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্স]
উইকিপিডিয়া আরো লিখেছে, কাউকে অদৃশ্য করে দেয়ার অব্যবহিত পরের ঘটনাটিই হল তাকে খুন করা। এক্ষেত্রে আটক ব্যক্তিকে প্রথমে নির্যাতন করা হয়, তারপর খুন করে লাশ গায়েব করে দেয়া হয়। এই হত্যার দায়দায়িত্ব কেউ স্বীকার করে না, ফলে চিরকালের জন্য “অদৃশ্য” থেকে যায়।
রহস্যজনকভাবে কিছু মানুষের নিখোঁজ হওয়া এবং নিখোজ হওয়ার কিছুদিন পর কিছু নিখোজ ব্যক্তিদেরর পচা-গলা লাশ পাওয়া যাওয়া সত্যিই একটি ভয়ানক ব্যপার কিন্তু এই ব্যপারটিই ঘটে যাচ্ছে গত এক-দেড় বছর যাবৎ ধরে। খবরের কাগজ গুলোতে প্রায়ই এই ধরনের খবর আসছে।
বলা নাই কওয়া নাই জল-জ্যান্ত মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে কোন কোন ক্ষেত্রে নিখোঁজ ব্যাক্তিদের পরিবারের কাছে ফোন করে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করা হচ্ছে। আবার করো ক্ষেত্রে মৃত্যুই হচ্ছে শেষ পরিনতি। আর যাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়নি বা
কোন মুক্তিপণ আদায়ের ফোন আসেনি ধারনা করা হচ্ছে তারাও হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এই পর্যন্ত মিডিয়া হতে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ি ৪৫ জন নিখোজ হয়েছেন তাদের ২৪ জনের মৃতদেহ বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া গিয়েছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের
পরিবারের কাছ থেকে জানা যায় অনেক সময় তাদের বাসা থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর লোক পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় পরে থানায় যোগাযোগ করা হলে তারা উত্তর দেয় তারা এই ব্যপারে কিছুই জানে না। সরকার ও বিরোধী দল এই ব্যপারে একে অপরকে দোষ দিচ্ছে। সরকার বলছে এইটা বিরোধী দলের কাজ তারা যুদ্ধঅপরাধীদের বিচার ঠেকাতে এই কৌশল অবলম্বন করছে আর বিরোধী দল বলছে সরকার তাদের দলের
নেতা-কর্মীদের অপহরণ করে হত্যা করছে। যাই হোক যারা নিখোঁজ হচ্ছে বা হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে তারা এদেশেরই মানুষ আমরা তাদের হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারি না, আমরা হত্যার বিচার চাই।
বাংলাদেশে একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে যাদের রয়েছে প্রচুর ক্ষমতা। তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে । এরা অপরাধী সন্দেহে ভাল মানুষকে পর্যন্ত ক্রসফায়ার করে , সাধারণ ছাত্রকে সন্ত্রাসি বানিয়ে গুলি করে পঙ্গু করে ফেলে, সন্ত্রাসিদের রাজনৈতিক গডফাদারদের বাঁচাতে হাত বেধে গুলিকরে
হত্যাকরে পরে মিডিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসি নিহত বলে প্রচার করে, শিকারোক্তি আদায়ের নামে অমানুষিক নির্যাতন করে, সাধারণ ছাত্রদের ধরে নিয়ে মিডিয়ায় জঙ্গি বলে চালিয়ে দেয়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের জন্য ট্রাফিক পুলিশ
থাকলেও মাঝে মাঝে তারাই হয়ে যায় ট্রাফিক কন্ট্রলার। মটরসাইকেল,প্রাইভেটকার থামিয়ে চাঁদা তোলে। তাদের অত্যাচার আর বিচার বিহীন হত্যাকান্ডের সমালোচনা
সবসময় বিভিন্ন দেশী-বিদেশী মানবাধীকার সংগঠনগুলো করে থাকে। বর্তমান সরকার যখন বিরোধী দল ছিল তারাই ছিল এই বাহিনীর সবচাইতে বড় সমালোচক তারা বলেছিল
তারা ক্ষমতায় গেলে তারা এই বাহিনীকে বলুপ্ত করবে অথচ তারা যখন সরকার হলো তখন এই বাহিনীকে বিলুপ্ত করাতো দুরের কথা বরং এই বাহিনী আরও লাগামহীন হয়ে গেছে।
সম্গ্রতি বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের প্রশ্নে মন্তব্য করতে গিয়ে বাংলাদেশে মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান ড: মিজানুর যে শঙ্কা প্রকাশ
করেছন তাতে রীতিমত শিহরে উঠার আবস্থা। এক সাগর রক্ত আর শত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে যে দেশটি স্বাধীন হয়েছিল, সে দেশ আজ ধীরে ধীরে গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হবে এই আশংকা সত্যি আমাদের জন্য চরম বেদনার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে মানুষের আশা আকাঙ্খার বাস্থবায়ন করার কথা ছিল ঠিক সে সময়
তৎকালীন ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে যে দুঃশাসন কায়েম করেছিল তাকেও হার মানিয়েছে।
মানবাধিকার অর্থই হচ্ছে মানুষ তার অধিকার নিশ্চিতভাবে যে কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ভোগ করবে। অথচ বাংলাদেশ আজ তার অবস্থান বিপরীত মেরুতে নিয়ে গেছে। যে সরকার নিজের খেয়াল খুশীমত নিজ কার্য চরিতার্থ করার জন্য রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের মানুষকে নির্যাতন করে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সে সরকারের হাতে মানবাধিকার নিশ্চিত করা অসম্ভব। এখন দরকার রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করার প্রশ্নে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় গণআন্দোলনের মাধ্যমে একটি নিখাদ সুস্থ, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা, যা রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করবে।

সামরিক শাসকদের কথা বাদ দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের আমলে এভাবে রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনা ছিল আমাদের সব কল্পনার বাইরে। কিন্তু এখন কল্পনাতীতভাবে এসব ঘটনা ঘটছে। ঘটনাবলীর নৃশংসতা দেখে দেশবাসী এখন বুঝতে পারছে, যারা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে তারা গণতান্ত্রিক সরকারের সমর্থক নয়। আমাদের জনগণের জন্য বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের তরুণদের জন্য একটি উপলব্ধি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল যে, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও কার্যত তাদের প্রবণতা ফ্যাসিতান্ত্রিক। এ দেশের তরুণ প্রজন্ম ১৯৭২-১৯৭৫’র পর্ব দেখেনি। দেখলে অবশ্য তাদের পক্ষে হৃদয়ঙ্গম করা কঠিন হতো না যে দলটি চরিত্রগতভাবে আসলে ফ্যাসিবাদী। ১৯৫৭ সালে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী যখন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তখনও গুণ্ডামি ও লাঠিবাজি করে এ উদ্যোগকে বানচাল করে দেয়ার প্রয়াস নেয়া হয়। ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে নতুন একটি বামপন্থী দল গঠনের উদ্যোগ হিসেবে মওলানা ভাসানী গণতান্ত্রিক কনভেনশন ডেকেছিলেন। সেই কনভেনশনে যোগ দিয়েছিলেন তত্কালীন পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলের সর্বজনমান্য নেতারা। তাদের মধ্যে ছিলেন খান আবদুল গাফফার খান, প্রিন্স আবদুল করিম, আবদুস সামাদ আচাকজাই, মিয়া ইফতেখার উদ্দিন, হাজি মোহাম্মদ দানেশ, মাহমুদ আলী, মোহাম্মদ তোয়াহাসহ আরও অনেকে। সেদিনও এসব শ্রদ্ধেয় নেতাকে নির্মম লাঠির আঘাতে রক্তাক্ত করা হয়েছিল। সুতরাং আওয়ামী ইতিহাসে রক্তাক্ত করার ঘটনা নতুন কিছু নয়। সে কারণে এদের আজকের আচরণ দেখে অবাক হইনি।

জাতি হিসাবে আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘ দিনের কিন্তু ১৯৭১ সালের সংগ্রামের পর জাতির প্রত্যাশা ছিল তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম হয়তো বা আর করতে হবেনা। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও বাংলাদেশের মানুষকে মানবাধিকারের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

বাংলাদেশে গুপ্ত হত্যা সাম্প্রতিককালে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ শিরোনাম হিসেবে বারে বারে উঠে আসছে। বিষয়টা হঠাৎ করে এতোই প্রকটভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে, বর্তমান সরকারের প্রতি নীতিগতভাবে সহানুভূতিশীল মহলও এ ব্যাপারে নীরব থাকতে পারছেন না। গুপ্ত হত্যা আতঙ্ক এখন শহরে-গ্রামে সর্বত্র সাধারণ মানুষকে এক নিদারুণ অস্বস্তি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে নিক্ষেপ করেছে। অতীতের একাধিক বারের মতো বিভিন্ন কণ্ঠে আওয়াজ উঠছে, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। পুলিশের আইজি গত ১৭ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশে গুপ্ত হত্যা চলছে বলে স্বীকার করেন, তবে এর সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছেন। সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার ব্যাপারগুলো পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে বলে তিনি জানান। এদিকে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন যে, বিএনপি-জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার পাশাপাশি দেশকে অস্থিতিশীল করতে হত্যা, গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে এবং নানাবিধ ষড়যন্ত্র করছে। অন্যদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন গুম ও খুনের জন্য কিম্বা এসব নৃশংস কর্মকাণ্ড বন্ধে ব্যর্থতার জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন। এতে করে দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বর্ধনশীল গুপ্তখুনের ব্যাপারে জনমণে আতঙ্ক ও সংশয় দিন দিন বেড়ে চলেছে। এ অবস্থা বেশী দিন এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। জন-নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধের প্রয়োজনে অতি দ্রুত এগুলো বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। গুম খুন প্রভৃতি চরম মানবতা বিরোধী অপরাধ। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের ভাষায় ‘এখন ক্রস ফায়ারের স্থান দখল করেছে গুপ্তহত্যা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দাবী করছে যে, এই গুপ্তহত্যার সাথে তারা জড়িত নয়। কিন্তু এর একটা রহস্য উদঘাটন হওয়া দরকার।’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, টিআইবি এবং আইন ও শালিস কেন্দ্রের কর্মকর্তা এডভোকেট সুলতানা কামাল এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। দেশের সুশীল সমাজ এখন প্রায় প্রতিদিন এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত এই ভীতিকর পরিস্থিতির অবসানের লক্ষ্যে কী পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে, তা দেখার উদ্দেশ্যে সরকারের প্রতি তাকিয়ে আছেন।
গুম খুন সংক্রান্ত ব্যাপারে জনমনে উদ্বেগের কারণ এই যে, গত বিজয় দিবসের পূর্ববর্তী মাত্র তিন সপ্তাহ কাল সময়ে অন্ততঃ ২৭ জন নিখোঁজ হয়েছে। লাশ পাওয়া গেছে কয়েকজনের। সরকারী হিসেবে গত দু’বছর এগারো মাসে ১২ হাজার খুনের কথা জানা গেছে। এই হিসেবের বাইরে গুম ও খুনের সংখ্যা কয়েক হাজার বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বলা হচ্ছে। সচেতন মহল এ অবস্থাকে জননিরাপত্তাহীন বলে বর্ণনা করছেন। এ অবস্থা হঠাৎ করে একদিনে সৃষ্টি হয়নি। বিভিন্ন মহল এবং মিডিয়া বহু পূর্ব থেকেই এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষীয় তরফ থেকে এসব তথ্য অস্বীকার করে বার বার বলা হয়েছে যে, অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেক ভালো। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতীত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন প্রকার অবনতি ঘটেনি বলে উল্লেখ করে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা থেমে থাকেনি। এ বিষয়টা উচ্চতর আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। উচ্চতর আদালতের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, কাউকে গ্রেফতার কিম্বা আটক করতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন গ্রেফতারের আগে নিজেদের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করবেন। গ্রেফতারের এক ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃতের অবস্থান সম্পর্কে তার পরিবারের সদস্যদেরকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এক শ্রেণীর কর্তা বা কর্মী তা অনুসরণ করছেনা বলে অভিযোগ প্রকাশিত হচ্ছে। এতে করে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে এবং সরকার ও প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়েছেন। অতীতে বিএনপি সরকারের আমলে অপারেশন ক্লিন হার্টের মধ্য দিয়ে সূচিত বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়গুলো কঠোরভাবে সমালোচিত হয়েছিল। সমালোচকদের শীর্ষে ছিলেন তদানীন্তন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী সরকার গঠনের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল যে এসব ভয়াবহ কাণ্ড-কারখানা থেকে সমাজ ও জনগণ রেহাই পাবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। বরং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলো সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে মানবাধিকার কমিশনগুলোর বিশ্লেষণে প্রতিভাত হচ্ছে।

সৌদি আরবে কোরান এর বিধানের অপপ্রয়োগে!!! আট বাংলাদেশীর শীরচ্ছেদ একই অপরাধে ব্রিটিশ, কানাডা, আমেরিকা, ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ’র আইন মানা হয় না কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই অপপ্রয়োগ কেনো?

সৌদি আরবে কোরান এর বিধানের অপপ্রয়োগে!!!
আট বাংলাদেশীর শীরচ্ছেদ
একই অপরাধে ব্রিটিশ, কানাডা, আমেরিকা, ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ’র আইন মানা হয় না
কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই অপপ্রয়োগ কেনো?

::

কিছুদিন আগে সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশীর শিরচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু তা কি শরীয়ত সম্মত ছিল? তাদের কি অপরাধ ছিল? ৮ জন মিলে একজন কে হত্যা এবং ডাকাতি? যাই হোক কুরআন শরীফে খুনীর শাস্তির ফয়সালা হলো কতল। কিন্তু ৪ জন চাক্ষুষ সাক্ষী অবশ্যই লাগবে। যদি চার জন সাক্ষী না পাওয়া যায় তাহলে ওই অপরাধীকে শাস্তি দেয়া যাবেনা। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ বা মামলার বাদী এ বিষয়ে চারজন সাক্ষী পেশ করতে পারে নি। আসামীদের স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। কিন্তু আসামীরা কি স্বীকারোক্তি স্বেচ্ছায় দিয়েছে তার কোন প্রমান নেই। তাদেরকে বল প্রয়োগ করে ও স্বীকারোক্তি আদায় করা হতে পারে যা ইসলামে গ্রহনযোগ্য নয়।
উল্লেখ্য এই সৌদি ওহাবী সরকার তারা অপরাধীদের বিষয়ে হিন্দু রাষ্ট্র ভারতের সাথে চুক্তি করেছে যে অপরাধীদেরকে সৌদি আরব থেকে পাঠিয়ে দেয়া হবে এবং শাস্তি প্রদান করবে ভারত। কিন্তু একই বিষয়ে দুই নীতি কেন? তাও মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সহানুভূতি পাওয়ার কথা ছিলো বেশী। তা না করে এই ইয়েমেনী দস্যু এবং ইহুদী বংশধর ওহাবী সৌদি সরকার বাংলাদেশের প্রতি বৈষম্য করেছে। ইসলামী বিধানের দোহাই দিয়ে ৮ জনকে কতল করেছে। কিন্তু তারা প্রকৃত পক্ষে ইসলামী বিধানের ভুল এবং অপপ্রয়োগ করেছে। এরা অআসলে ইসলাম-মুসলিম কারো বন্ধু নয়। এরা মুসলমান নামধারী মুনাফিক যারাকিনা ইহুদী, কাফির-মুশরিকদের দালালী করে মুসলমানদের ক্ষতি করতে চায়। এরা ইসলাম ইসলাম করলে ও হারাম রাজতন্ত্র চালায়। এ মুসলিম নামধারী মুনাফিকদের ব্যাপারে সাবধান!!!!!!!!!!!!

নভেম্বর ১৭ ও ২৩, ২০০০:
রিয়াদে ২ টি বম্ব ব্লাস্ট এ বেশ কিছু মানুষ হতাহত হয়।

ফেব্রুয়ারী ৪, ২০০১:
কানাডিয়ান উইলিয়াম সিম্পসন ও ব্রিটিশ আলেকজান্ডার মাইকেল ও আরও কয়েকজন প্রকাশ্যে টিভিতে স্বিকার করে যে তারা সেই সব বম্ব ব্লাস্ট ঘাটয়েছে।

এপ্রিল ২০০২:
জানা যায় যে ২০০১ সালে তাদের মৃত্যু দন্ড ঘোষনা করা হয়েছে।

নভেম্বার ২০০২:
উইলিয়াম সিম্পসন এর বাবা আশা প্রকাশ করেন তার ছেলে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। প্যারিসে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সৌদী পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রিন্স সৌদ আল-ফয়সাল বলেন, কানাডার মত বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রের এক নাগরিকের মুক্তির জন্য তার রাষ্ট্র যথাসাধ্য চেষ্টা করছে ও করে যাবে।

মে, ২০০৩:
উইলিয়াম সিম্পসন এর সৌদী ল'ইয়ার শেখ সালাহ্ সি.বি.সি নিউজ কে জানান তারা সৌদী রাজ পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং সংকেত পেয়েছেন যে তাদের এ আবেদন গৃহিত হবে এবং উইলিয়াম সিম্পসন খুব শিঘ্রই মুক্তি পাবে।

আগস্ট ২০০৩:
সৌদী বাদশাহ'র ক্ষমার প্রেক্ষিতে উইলিয়াম সিম্পসন সহ আরও ৫ ব্রিটিশ নাগরিক মুক্তি পায়।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করা হয় ব্রিটিশ যুবরাজ চার্লস্ উইলিয়াম সিম্পসন সহ আরও ৫ ব্রিটিশ নাগরিক মুক্তির ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

ঈষদ সংক্ষিপ্ত। সূত্র : http://www.cbc.ca/news/background/sampson/

সাপ্তাহিক ২০০০ এ আমার যত লেখা

কাজী নাসির মামুনের ‘লখিন্দরের গান’ একটি পাঠ ও তৎ- সংক্রান্ত কিছু পতিতকথন!

‘পরম্পরা’ কবিতার শুর“তে একটা নিয়মের পরম্পরা লক্ষ্য করা যায়। মাত্রার
নিয়ম মেনে প্রতি চরণে অন্তমিল; আমাদের কবিতায় ছন্দের অর্থাৎ মাত্রার
প্রাচুর্য এবং বাধ্যবাদকতা আর তার মান্যকাল কিংবা আজ্ঞাবহকালের কথা
মনে করিয়ে দেয়। যখন অন্তমিলকে-ই অনেক কবিতা-প্রেমি মতান্তরে কবিতা-
শাসকরা মনে করতেন আসল জিনিস অর্থাৎ ‘প্রকৃত কবিতা’।
ফেরার ই”েছ প্রবল রোমান্টিক আবহের প্রতীকি বিন্যাস। বিষয়ে, ভাষার
উপলব্ধিতে, বর্ণনায়- এই সময়ের কবিতা।

ফে.ই- কবিতার প্রথম পংক্তি যদি কবির নিজের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে ভাব ঠিক
আছে শুধু যতি চিহ্নের সমস্যা ছাড়া। কেননা, কবি নিজেকে এড্রেস করলে
কমা ব্যবহার করবেন কেন? আর যদি সার্বজনিন করতে চান অর্থাৎ কথক নিজে
হয়ে পাঠককে এড্রেস করা তাহলে ঝামেলা হয়ে গেল। তৃতীয় স্ট্রোঞ্জায় নিজের
উপ¯ি’তি কবিতাটিতে ভাবকে এলোমেলো করে দিয়ে কবিতা হওয়ার পক্ষেই অš
—রায় হয়ে দাঁড়াল! সুরীন্দ্রনাথ ছন্দ সম্পর্কে সেই যে উক্তি করেছিলেন,
সাধারণত, মাত্রা ঠিক রাখতে এবং ছন্দে থাকতে একটা অভ্যাস গড়ে তুললেই
লাভবান হওয়া যায়। আর সেই অভ্যাসটা হ”েছ শব্দ বিন্যাসের বিজোড়ে
বিজোড় গাঁথ, জোরে গাঁথ জোড়। এর ফলে গদ্যরীতির কবিতায় অক্ষবৃত্তের
ছন্দত মুক্তক ছন্দ সাবলিল হয়ে উঠল।

কবিতা পড়ছি আর লক্ষ্য করছি, “এই রীতি ভর করেছে মামুনের কবিতায়।
কিš‘ তিনি হয়ত ঠিক করেছেন ব্যাকরণ জেনে লিখবেন না। যার ফলে ই”ছায় কি
অনি”ছায় ছন্দ্র পতন হ”েছ। অবশ্য একে মাত্রা পতন-ই বলা ভাল। যদিও ব্যাকরণ
মেনে লিখা কবির একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। আর আমি মনে করি না প্রকৃত
কবিতার জন্য এটা কোন ফ্যাক্টর।

“যেটা শিকার”- শারীরিক আবহের কবিতা। মাত্র দুটি উদ্বৃতিতে
কবিতাটি রচিত হয়েছে। প্রথমটির কথক কবি নিজে। দ্বিতীয়টি নিজেই
চিহ্নিত করে দিয়েছেন। ফ্রয়েডের লিবিডো যখন প্রভাব বিস্তার করছে তখন
কবি অন্য ঠোঁটের গীতিকাব্য আকঁলেন জ্বলজ্যান্ত ভাষায়

“তারার ফসিলে কোনদিন
অমাবস্যা পেলে
ডেকে নিও রাতের গুহায়।
তবে এই কবিতাতেও আবার সেই কথক বিরম্বনা কথকের এলোমেলো বিস্ত
ারে কবি না পাঠক বিভ্রান্ত প্রশ্নসাপেক্ষ।

তার অনেকগুলো কবিতাতেই সঞ্চারী পড়ে মনে হয়েছে এগুলোই সব, আর
কিছর দরকার নেই। অনেক ক্ষেত্রে কবিতার ভেতরে প্রবেশের পূর্বের মনে হয়েছে
বাকীগুলো বোধহয় বিস্তার। তার সঞ্চারীগুলোর দু’বার আবেদন আমাকে
এমনটা ভাবতে বাধ্য করেছে।

স্যাটায়ার ধর্মী কবিতা হ”েছ গিয়ে দুগ্ধবতী সিরিজের শেষ কবিতা। এই ৩
নাম্বার কবিতাটিতে ব্যাঙ্গের স্বার্থকতা প্রকাশ পেয়েছে
“ প্রান্তরে দাহ দাহ আগুন শাসনে
গাঙ্গেয় অববাহিকা ভূগোলের হিসাব খাতায়
বিশ্বের তৃতীয় বধূ, দুগ্ধবতী হয়।”(দ্র“ত)
এখানে পিতার আদলে অভিভাবক দেশগুলোর চরিত্র চিত্রন তাদের দাদাগিরির
ছাপচিত্র। সুন্দরভাবে অংকিত হয়েছে। পোষ্ট কলোনিয়াল চিন্তা।
“আমরা..............কিনে যাই” স্যাটায়ারের মধ্যে নিজেদের অপ্রাপ্তি ও
ব্যর্থতার নিরঙ্কুশ প্রকাশ মনে করিয়ে দেয় পূর্ববর্তী প্রজন্মের একটি

শক্তিশালী বৈশিষ্টের কথা। আর অসঙ্কোচ আত্ম-উন্মোচন-ই ছিল নব্বই দশকের
কবিকূলের উলেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যের সাথে কাজী নাসির মামুনের
কবিতার স্বার্থকতা কোথায়? খুঁজলে সহজেই চোখে পড়ে, “সাহসী আত্ম
বিশেষন” প্রক্রিয়াটি। নাসির কবিতাকে “আমরা” শব্দটির ব্যবহার করে
তাকে দিয়েছেন সার্বজনীনতার আস্বাদ আর প্রতিনিধত্ব করেছেন শূণ্য
দশকের সকলের। নিজেদের উন্মোচন করেই ক্ষান্ত হননি, বিশেষণ করেছেন ব্যক্তির
সহজাত স্বার্থকতার। মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন, দাঁড় করিয়েছেন- মিরর
অফ মাইন্ড (মান্ড মিররের)। সেলফ জাজমেন্ট এর।
“আর এই মান্ড মিররের দেখা পাওয়া যায় কবির পরবর্তী কবিতা,
আত্মকামে আমার........... আমার” এ। কবিাতর প্রথম পংক্তি “আয়না লাবণ্য
ধরে আমার ছায়ার।”

ছন্দ পতন কিংবা মাত্রার হিসেবের গড়মিল রয়েছে এমন অভিযোগ
উপ¯’াপন করতে চাইলে সব কবিতার দিকে হাত না বাড়িয়ে একটা কবিতা
থেকেই দেখানো যাবে, যেমন- “বসন্তে মায়ের কথার ফুলঝুড়ি” কবিতাটি
অক্ষরবিত্ত ছন্দের। আর অক্ষরবিত্ত ছন্দে শব্দের প্রথম যুগ্ম ধ্বনি একমাত্রার মূল্য
পায়। আর সেই হিসেবে- একদিন/সলতে/ভাসতে/ছিঁড়ে যায়। মাত্রা কিংবা
ছন্দ প্রসঙ্গ আসত না যদি না কাজী নাসির মামুনের কবিতায় ঐ
প্রবণতাটা না থাকত। কথা হ”েছ নিয়ম না মানলে নাই, কিš‘ মেনে যদি ভুল
থাকে তা কি একজন কবির জন্য দুঃখজনক নয়? সেখানে শূণ্য দশকের
পতাকাবাহীদের মধ্যে তিনি একজন।
প্রাণি প্রার্থনা
লাটিম তাড়িত বালক
ঃ কিশোর বা কৈশোরিক।
সঞ্চিত সোলক
ঃ বুক বা যুবতী মেয়েরা।
গোপন অহম
ঃ মাস্টারবেশনে আগ্রহী করে তুলে এমন কিছু।
সময়সড়ক
ঃ সেশনজত
গতির বাইজি
ঃ সময়/বয়স
বোতল
ঃ যৌনাঙ্গ।
তরলবন্দিজিন
ঃ প্রজননের উপাদান
সচল স্পপেজ

ঃ শুয়ে থাকা।
ফেরারি গোলাপ ঃ গণিকা
শৃগাল চতুর
ঃ শেয়ালের কুমির শাবল ভক্ষণের কৌশল/এক জিনিস বারবার
দেখিয়ে ঠকানো।
হাইরোগিফিক্স ঃ
কুকুরী- প্রচলিত অর্থ খুঁজলে ভয়াবহ অর্থ দাঁড়ায়। কিছু লুপ্ত অর্থ
বুঝতে পারলে হৃদয়ে চিন করে উঠবে।

“কুকুরীর জন্য সংবেদনা”- এই একটি কবিতার আলোচনা লিখেই মনে হয় দিস্তার পর দিস্তা শেষ করা যাবে। এই প্রসঙ্গে বুঃ বসুর কথা মনে পড়ছে। তিনি ১৯৪০ সালে......................। এখন বদ্ধদেব বসু থাকলে বলা যে, দ্যাখেন

বস, বাউলা সাহিত্যে একজন কবি আবারো রোমান্টিক আবহে প্রেমের
কবিতা অত্যন্ত সাহসের সাথে প্রথম কাব্যগ্রন্তেই সন্নিবেশ করেছেন।
পারলে এই কবিতাটিকে “লখিন্দরের গান” থেকে বাদ দেন তো কিংবা সমগ্র
প্রেমবাহিত কবিার ইতিহাস থেকে বাদ দিয়ে দ্যাখেন তো। কেন জানি আজ
কবিতাটি নিয়ে গর্ব করতে ই”েছ হ্েচছ। (আবেগী উ”চারণ)
পতনে কালিন্দি নিশায় ঃ

১। অতিরিক্ত যাতচিহ্ন দৃশ্যে বেঘাত ঘটায়। অনেকের ফরমেটে স্বরবৃত্ত ছন্দের
অনেকটাই দুর্বল বিস্তার।
২। নারী দেহের বর্ণনায় আগ্রাসনের পুরনো আখ্যান রূপকের আশ্রয়ে
প্রতিপাদ্য হয়ে উঠে।
৩। উপনিবেশিক শাসব ব্যব¯’া ও উত্তর উপনিবেশিক চিন্তার সঞ্চার ঘটেছে
(১) অংশে। কিš‘ ঐ আাচর স্বরবৃত্তের আদলে থাকতে গিয়ে অন্তমিল আর অমিল
অনেকটা অগোছালো করে তুলেছি কবিতাটির অংশ বিশেষকে।

ডাহুক সয়েছি ক্ষয়....
(৮+৬) স্তবকের ১৮ মাত্রার প্রচলিত সনেটগু”ছ। কাজী নাসির মানুষের কবিতা
পড়ে মনে হয় পেটার্ন গত কোন বৈচিত্র্যের প্রতি তেমন একটা নিরীক্ষাপ্রবণ
নন তিনি। আর প্রচলিত ব্যাকরণীয় অনুসঙ্গ বিনিমার্নের প্রতি খুব একটা
ঝোঁক নেই। তবে নিয়মে থাকার একটা সাধারণ প্রবণতা ঠিকই আছে। তবে
এ-ও সত্য নিকটবর্তী দশকের দার্শনিক বি”িছন্নতা, প্রতিষ্ঠান মুখি
হওয়া না হওয়ার দোদুল্যমানতা, কবিতার সামাজিকরণ নিয়ে নিজেদের মধ্যে
তৈরী হওয়া কনট্রাডিকশন (১) বাংলাদেশেও ক্ষীণ ও ধীর পদ্ধতিতে এই রণকৌশল
গ্রহণ করেছেন প্রতিষ্ঠান বিরোধী নব্বইয়ের কবিগণ। এটা শুভ লক্ষণ ও সঠিক
কৌশল। কেননা, কবিতার আস্বাদ গ্রহণের অধিকার সকল পাঠকের। “যেহেতু
কবিতার আস্বাদ গ্রহণের অধিকার সকলের আছে বলে নব্বইয়ের অনেক কবিদের
বিশ্বাস তাই কবিতার ভাষাও বোধ সকলের গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা ছিল। কিš‘
তারা তা করেন নি। শিল্প অসম্মত মৌলিক কবিতাকে আপতঃদৃষ্টিতে দুর্বোধ্য
ও দুরূহ বলে মনে হত। কোনো মৌলিক কবিতা অন্তদৃষ্টি সম্পন্নতার কারণে
সাধারণের কাছে অদ্ভূত ও দুর্বোধ্য বলে মনে হতেই পারে।” আর তার পক্ষে
যুক্তি হিসেবে উপ¯’াপন করা হয়েছে র‌্যাঁেধা সুচীন্দ্রনাথদের কথা। কিš‘
তথাগত প্রাতিষ্ঠানিক কাগজের গতানুগতিক ধারার পাঠকরা র‌্যাঁধো
সুধীন্দ্র পড়েন না। আর কন্ট্রাডিকশনটা এখানেই। এক দিকে সকলের কাছে
পৌঁছার জন্য রণ কৌশলে পরিবর্তনে অজুহাত অন্যদিকে দুর্বোধতা। যার
ফলে বিভক্তি ও কাব্যিক বি”িছন্নতা ছিল নব্বইয়ের সাধারণ ব্যাপার।
বি”িছন্ন নিরীক্ষার ফলে ¯’ায়িত্ব পায়নি কোন আলাদা বৈশিষ্ট্যের কবিতা
ধারা। আর যে লোকজধারার ব্যবহার নব্বইয়ের কবিতায় নতুন এসেছে বলে মনে
করা হয়, তার জবাব পাওয়া যায় আল মাহমুদ, ওমর আলী, রফিক আজাদের কবিতার

দিকে তাকালে। সবচেয়ে বড় কথা রাজনৈতিক উদাসীনতার ফলে মৌলবাদের
প্রশ্রয় ও বেরে উঠার অন্তরায় হিসেবে কোন শক্তিশালী আদর্শিক বৈশিষ্ট
দাঁড় করতে না পারা। এটা মূলত ঘটেছে প্রতিষ্ঠানের দ্বার¯’ হয়ে একাই থানায়
সবাই মিলে খাবার গ্রহণের ফলে।

আর পূর্ববর্তী দশকের কিংবা সহযাত্রী অগ্রজনের প্রভাব ও ভাবের নিজস্ব স্বাতন্ত্রে জন্য। শূণ্য দশকের অনেককে অত্রিম করতে হয়েছে সংশয়ী সময়কাল। যারা একটু সময় নিয়ে বই প্রকাশ করেছেন আমার মনে হয় তারাই
ভালোবাসি দানবের মতো/অভ্রভেদী পাখি
প্রিমিটিভিজম এর উদাহরণ।
“নদী” কবিতাটি আশির দশকের প্রকরণ সবর্স কবিতার গন্ধমাখা।
কৈশোরিক ও যৌবনের স্মৃতি আক্রান্ত ভাবাবেগ ভরা। যা কবিতার চেয়ে
বিবৃতির সংমিশ্রণ, অন্যান্য কবিতার বৈশিষ্ট্যের সাথে ঠিক যায় না।
তেমনি যায় না স্বববৃত্ত ছন্দের অন্তমিলের প্রতি মনোযোগী কবিতাগুলো
(কুমুরের ফুল হয়ে আয় ইত্যাদি)।

কবিতার প্রতি একজন কবির প্রেম নিজের উরসের মত। অনেক ক্ষেত্রেই
স্মৃতিতাড়িত, মানবিক দুর্বলতা অতিক্রম করে কবিতা নির্বাচন সম্ভব হয়
না। ফলে শূণ্যের একজন উলেখযোগ্য থেকে গুর“ত্বর্পূ হয়ে উঠা কবিকেও
সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়।

অন্তমিল ও সনেটের প্রতি ঝোক বেশী কাজী নাসির মামুনের। অথচ তা যদি মাত্রাগত কিংবা পংক্তিগত কিংবা স্তবকে বৈচিত্র থাকতো তাহলে মেনে নেয়া যেত। একমাত্র শব্দের গুপ্তাব¯’া ও বিষয়ের কেন্দ্রিকীকরণ উপর ভর দিয়ে ভাব-কবিতার তরীখানা কতদূরই বা নেয়া সম্ভব?
হুমায়ূন আজাদ কবিদের তিনটি ভাগে ভাগ করে ছিলেন আর তা হল...........
মামুন যতিচিহ্নের ব্যাপারে আগ্রহী। আর তার এই আগ্রহ বহুত নিয়ে
প্রকাশ পেয়েছে প্রচলিত সনেটরীতির ক্ষেত্রে।

তার সিরিজ কতিবাগুলোতে একটি ্রবণতা লক্ষ্য করা যায় তা হল সিরিজের
বিন্যাসে ডিসকনটিনিটি অর্থাৎ অধারাবাহিকতা। কনটিনিটি ভাঙ্গা
যদিও পোস্ট-মডার্ন মন মানসিকতার বৈশিষ্ট্য, তবে তা যদি হয় একই
কবিতার ক্ষেত্রে। কিš‘ এখানে কবি সিরিজে বিন্যাসে এমনটা করলেন কেন,
ভাববার বিষয়। এখানে কবিতার ডিসকনটিনিটি গ্রš’টা ধরা দি”েছ
বিপরীতার্থে। কবির ভিন্ন সময়ে লিখিত (সম্ভবত) এলামেলো চিন্তার
ধারাবাহিক প্রতি¯’াপন হিসেবে সিরিজের নির্মাণ অনেকটা আরোপিত
প্রস্তাবের নমুনা মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

কাজী নাসির সম্পর্কে একটি অ¯’ায়ী এবং ভাব বিস্তারী মন্তব্য করা যায় এমন যে, “এই কবি নিয়ম ভাঙ্গার কোন নিয়ম নিয়ে কাব্য জগতে আসেন নি পক্ষান্তরে নিয়মের বাহিরে যাবারও যেতন একটা প্রয়াস চালান নি। শুধু মেধার পূরণ ঘটাতে চেয়েছে প্রথম বইটিতে।

শব্দ নির্মাণে আগ্রহী কবি আরো একটি দিকে এগিয়েছে ডিসকভার এর
নেশায় আর তা হল ইরোটিসিজম। যৌনতার ক্রিফটগ্রাফিক নির্মাণ, শূণ্য
দশকের উত্থানশীল কবিতার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের উলেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে
নিঃসন্দেহে আলোচিত হবে।

“লখিন্দরের গান” সিরিজের সনেটের প্যাটার্ন কবিতাটির বিষয়ব¯‘র আবহের
সাথে মিলানোর প্রয়াস মনে হয়েছে পোস্ট-কলনিয়াল কনসেপ্টে বিষয়কে ঐ
বিষয়ের প্রেক্ষিতে দেখা এবং সাবরটার্নকে গুর“ত্ব দেয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়।

কিš‘ পরবর্তীতে ডিসকনটিনিটি বিশেষত সিরিজহ বিস্তারে অন্য
ভাবনায় ফেলে দেয়। তাহলে কি প্যাটার্ন নির্মাণে আদো কবির তেন আবহ
তৈরীর ই”েছ কাজ করে নি শুধু আমার নিজস্ব ভাবনা।

লখিন্দরের গান পড়ে ভাবছিলাম বেহুলার কথা। যেন এমন আর কি, আজও বাড়ি ফেরা
হল া। এজন্য দুঃখ নেই। শুধু কথা থাকে বেড়ালটা আজো দরজার কাছে বসে
থাকবে। অর্থাৎ যন্ত্রিকতার বাহিরের অনূভব। যেন তারপরও তার কথা মনেপড়ে
টাইপ কিছু। অনেকটা মহিলাদের মেটার্নটি বু-কালীন সময়ের মত। মাতৃ
ত্বের নীল সময়ে অযাচিত দুঃখবোধে কেঁদে উঠে হৃদয়।

মিয়া বাড়ির বৈঠক খানায় যজ্ঞ বুড়ির গালগল্প পড়ে রঙধনুর সাত বড় হাতের
মুঠোয় পাওয়া মানে পাউয়ার এর আধিপত্যের কথা মনে পড়ল। আর মনে পড়ল
মিশেল ফুকোর পাউয়ার থিউরিটি। যা মানুষকে শাসন করে মানসিক শারীকি
ও রীতি প্রকৃতির মাধ্যমে।

নব্বইয়ের কবিরা ভেবেছিলেন, সুখ তাদের একান্ত বিষয় তা কখনোই
সামাজিক নয়। সমাজ সভ্যতার রাজনীত কিংবা বিশ্বের সাথে এর কোন
সংশিষ্টতা নেই। কিš‘ শূণ্য এখন পর্যন্ত মনে হ”েছ এই ভাবনাটির সাথে
একাত্ত নয়। কেননা বিষয়িক বৈচিত্রতা আত্ম-সমালোচনা তাও যদি পোস্ট
কলনিয়াল ভাবধারার আবর্তিত হয়।

নব্বইয়ের যে সকল কবিতা এখনও সমান সক্রিয় এবং প্রতিস্ঠিত নিজস্ব
স্বরে কবিতা চর্চা করে বলেছেন মূলত তাদের প্রেক্ষিতেই শূণ্যের ভিক্তিকরণ।
যারা অতি কিংবা এখনও নিজের স্বরটি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন নি সঙ্গত
কারণে তাদেরকে আলোচনায় না আনাটাই যুক্তিযুক্ত। কারণ সচরাচর প্রতিষ্ঠিত
নিজস্ব স্বরেই কবিতা অব্যাহত রাখেন কবিরা।

পিতার সৌধের নিজে ভূমিষ্ঠ কুকুর
নাম লিকে নিজেদের
তবে সুখ কোন মহিষের নাম?
ভরসার মাতৃত্বকোড়ে প্রলোভন অবশিষ্ট থাকে।
ত.স.কো.ম.না
রাজনৈতিক মহত্বের বলি, জাতির পিতা ও তার বলিদান, আমরা আজ জনে জনে
জানি। গজিয়ে উঠা পরগাছারা আজ বিরাট মহিরূহ সমান। নিজেদের নাম
এরা ইতিহাসে ই”েছ মত উঠা”েছ, মুছে দি”েছ।

দেশের আর্তসামাজিক প্রেক্ষাপট অতীত ইতিহাস, ইতিহাসের কলঙ্ক ও সেই
কলঙ্কের শেকড়সহ পুনর“ত্থান সবকিছু চমৎকার ভাবে উঠে এসেছে। “তবে
সুখ....... কবিতায়। উত্থানশীল কবিতার বৈশিষ্ট্য ধারণ করে ক্রিপ্টোগ্রাফি
রচনায় স্বাক্ষর রেখেছেন কাজী নাসির মামুন।

শূন্য দশকে এসে আবার হৃদয়তাড়িত অনুভূতিগুলো গভীর সিম্ফোনী নিয়ে
কবিদের লেখায় জেগে উঠছে। আর সঙ্গত কারণেই তা ক্রিপ্টোগ্রাফিকভাবে।
অনুভূতি ধরা দি”েছ অনেকটা মেনেলা সিনেমার সেই শেষ সংলাপের মত
“আমি এই জীবনে অনেক মেয়েদের সাথে মিশেছি। অনেককেই ভাল লেগেছে।
তারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছে আমাকে মনে রাখবে তো? আমি বলেছি রাখব।
শুধু ঐ মেয়েটাকে কখনোই ভুলব না যে আমাকে কোনদিন বলেনি আমাকে মনে
রেখ।”

ডাইমেনশনাল সময়ে মনও বহুগামী হয়। আবার অসংকুচে বিশেষণ করে।
সোসাল ফ্লিক্সিবিলিটি ও কিংবা উদার নৈতিকতার পরিপূর্ণ ছাপ কেবল
শূণ্যের সাহসী তারণ্যের রচনাকেই খোঁজা যেতে পারে।
রাজা গোপালের শাসনামল, বাইকামুলী দাসী, কংক দাশী, থিবিস, মহান্ত।
এলিয়ট যেমন ফ্রিভার্স এর পাশপাশি কবিতায় মুক্ত ছন্দের সাথে লিরিক এর
ব্যবহার করেছেন তেমনি কাজী নাসির মামুনের কবিতায়ও দেখা যায়।

নাসির মামুনের কবিতা শুর“ হয়েছে পরম্পরা দিয়ে। যা শুর“ টিএস এলিয়টের
দ্যা লাভ সং অব জে আলফ্রেট প্র“ফক কবিতাটির স্টাইল-এ। যদিও বাংলা
সাহিত্যের এলিয়টের প্রভাব এলিয়ট চর্চা নতুন কিছু নয়। রবী ঠাকুর থেকে
জীবনানন্দ সবাই কোন কোন ভাবে এলিয়ট দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।

বইয়ে শিরোনাম কবিতাটি মামুন লিখেছেন মিথলজিকেল এসপেক্ট নিয়ে।
সিরিজ কবিতাটির সূচনা সনেটের আঙ্গিকে দেখে মিথের বৈশিষ্ট্যের সাথে
আঙ্গিকে কবি কবিতাটি সামঞ্জস্য আনতে চেয়েছেন বলে মনে হয়। কিš‘ এর
অধারাবাহিকতা (ডিসকনটিনিয়াস) পাঠককে এলোমেলো ভাবনার সামনে
দাঁড় করিয়ে দেয়। সিরিজ কবিতা কিংবা দীর্ঘ কবিতা স্বভাবতই কবির
কাছে একটুস বেশী মনোযোগ দাবি করে।

সূর্যই নাটের গুর“
“লখিন্দর বেহুলা জাগাও, কুলনাশা মরা দেশ।”
ও পাখি ও বৃক্ষ,
ও আমার লাটিম ঘুরানো মাঠ
দেখাবো সাহস?
লখিন্দরের গান শেষ হয় এভাবে
মাছে বাতে স্বপ্নমোড়া গুপ্ত পুলসেরাত;
আমার দখল নেবে কে আছে এমন?

বাঙালির জাতিয়তাবোধের দৃপ্ত উ”চারণের মধ্য দিয়ে এর অবিনাশী স্রোতের
প্রতিকূলে দাঁড়াতে চেয়েছেন কাজী নাসির মামুন। লক্ষ্য করছি উত্তরে
উপনিবেশিক চেতনা জাগ্রত হ”েছ আমাদের মধ্যে। আর এই জাগ্রহত চেতনার
সারনীতি ক্রমশঃ লম্বা হ”েছ ধৃষ্ট লাঠিয়ালদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পা”েছ,
যা আমাদের পরিচয় করিয়ে দি”েছ নিজের সাথে নিজেকে।

সুমন চট্টোপাধ্যায়ের “জাতিস্মর” গানে সুন্দর একটা কলি আছে।
“.......... বেহুলারা কখনো বিধবা হয় না
এটা বাংলার রীতি।”

প্রথম আলো পত্রিকার বন্ধুসভায় প্রকাশিত কবিতা নিয়ে বই `পা ভাঙা চড়ুই'

বন্ধুসভায় প্রকাশিত বন্ধুদের লেখা কবিতা নিয়ে বের হয়েছে কবিতার বই পা ভাঙা চড়ুই। বইটি প্রকাশ করেছে সময় প্রকাশন। সাইদুজ্জামান রওশন ও মুহম্মদ আইয়ুব সরকার সম্পাদিত এ বইটির মূল্য ১০০ টাকা। বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় সময়ের স্টলে।
বইটিতে যাঁদের কবিতা স্থান পেয়েছে তাঁরা হলেন— সুমন আজাদ, অপূর্ব অনির্বাণ, নূরুল ইসলাম বাবুল, মালিহা জেরিন, জাহাঙ্গীর জয়েস, কবির য়াহমদ, গৌরী গোস্বামী, রিফাত আরা, তাসলিমা রহমান, শুভব্রতা ইয়াসমিন, সজল ছত্রী, সৌরভ সোহাগ, সন্ত কবীর, আসমা বীথি, মো. কামরুজ্জামান বাবু, সৌম্য সরকার, সুমন নূর, ফরিদা খানম, পাভেল রিয়াজ, লিপি আক্তার, সেলিনা শিউলী, শরীফ বাচ্চু, আতিয়া রহমান কণিকা, মুহাম্মদ আইয়ূব সরকার, রাজেশ্বরী প্রিয়রঞ্জিনী, কাজী দিলরুবা আক্তার লীনা, আবু বোরহান, মির্জা মু. ইমতিয়াজ শহীদ, রুহুল রুহিন, এস এম আরমান, ঊর্মি খান, সারওয়ার-উল-ইসলাম, আকমল হোসেন, সুকান্ত গুপ্ত, আফসানা কিশোয়ার, শান্তনু হাসান, হাদিকাতুন নুজুম, হাসিবা তানজিন, অঞ্জন আচার্য, হাসান মাহমুদ, আলাউদ্দিন খোকন, রেজোয়ার ফেরদৌস, মো. আব্দুল্লাহ আল নূহু, সাইফুদ্দিন রবিন, এহসান জুয়েল, শাহ্নাজ সুলতানা রিংকী, তাহমিনা তানিয়া, আবু সাঈদ, মো. এ অনুচ্চ, মৃণ্ময় মারুফ, আশরাফ চঞ্চল, সুবীর কাশ্মীর পেরেরা, শৌনক দত্ত তনু, চৌধুরী ফেরদৌস, গৌরব জি পাথাং, তায়েব মিল্লাত, জি এম হুমায়ূন আজম, সৈয়দ কামাল জামান, আমির হামজা, শাহেদ কায়েস, আফরোজা আক্তার হ্যাপি, খায়রুল বাশার, গাজী শাহিদুজ্জামান, ফ্লোরা আহমেদ, সোহাগ সাওয়াস্থ, আব্দুর রউফ রনি, আখতারী ইসলাম, সুমন আজাদ, ফরিদা ইয়াছমিন, সৈয়দ রুবাইয়া, ফারাহ্ দিবা আহমেদ, ফরিদা খানম, তাসনুভা অরিন, সুফিয়া জমির ডেইজি, পথিক চাঁদ, সুব্রত সানি, এন ডি মিথুন, সবুজ, মৌমিতা সিংহ, সবুজ বড়ুয়া, খোদেজা মাহবুব আরা, কাজী রাকিবুল ইসলাম, এ্যামি মারমা, মিজান মোহাম্মদ, দেলোয়ার হোসাইন, আতাউর রহমান, সোহেল আল মামুন, মুমা হাসান গুরু, সরকার মীনা, তৌহিদুল আলম, প্রতুল শীল, নাবিলা ইসলাম, তামান্না কবির, আল মাহফুজ, চৌধুরী সবুজ, সুকান্ত বিশ্বাস, নাসিমুল আহসান, তানিয়া বখ্শ, ফারহানা নরিন, আরমান আরজু, জেমস আনজুস, আশিক দাশ, মু. তরিকুল ইসলাম, সন্জয় দে, হাসান মোস্তফা, মারুফ শিহান, শাহিদা খাতুন, শহীদুল ইসলাম, তৌহিদুল আলম, মারুফ ওয়েসিস, হাসান মোস্তফা, সালেহীন শিপ্রা, পৃথ্বিশ চক্রবর্তী, কথাকলি দাস, কোহিনুর রুমা, ইফতেখার আজাদ, হূমায়ুন আজম, নুসরাত জাহান, পারভীন আক্তার, জুয়েল দেব, সাদিয়া আশরাফ, শহীদুর রহমান, মো. মুফিজুর রহমান, হাসনাইন হীরা, শাকিল মাহ্মুদ, রুবেল শঙ্কর, মুস্তাইন সুজাত, জান্নাতুল ফেরদৌস, ইজাজ আহেমদ, রেহানা রিমি, মোহাম্মদ নাহিদ রহমান, রিয়াজ ভূঁইয়া, জুলফিকার শাহাদাত্, বায়েজিদ ভূঁইয়া, তানজিম আফরোজ, এস খান, রাহাত রাস্তি, সজল খান, মঞ্জুর মঈন, আবেদা সুলতানা, মনিরুন নাহার, রিক্তিমা অনু, বিপ্রতীপ অপু, শাহ্ কুতুজ্জামান, সাহেরা খাতুন শেলী, কাব্য আহমেদ, অসিত, অর্থী, রাশেদ শাওন, মো. রেজাউর রহমান ও জীবন শাহ্।
আবু সাঈদ
যোগাযোগ: ০১৭২-৩২০৯৪৪৮


লিংক