ভোরে, অনেক ভোরে যখন পড়ার জন্য সবাই জেগে উঠতো, তখনও আমি ঘুমিয়ে থাকতাম। আর এর কারণ ছিল আমাকে আমার মা ভোরে ডেকে দিতেন না। আমি খুব বিরক্ত হতাম এই ভেবে যে আমার প্রতিদ্বন্দি অন্যরা আমার চেয়ে বেশী পড়ে ফেলেছে ভেবে। তখন সবে হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছি। আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম আমাকে ডেকে না দেয়ার কারণ কি? তিনি বলেন, বাবা এত ভোরে ঘুম না নষ্ঠ করে দিনে একটু বেশী পড়লেই হয়! আমি উত্তরে সন্তুষ্ঠ হতাম না।
আমি তরকারিতে ঝাল পচন্দ করতাম। যখন ভার্সিটি বন্ধ হলে বাসায় আসতাম, তখন আমাদের বাসার সবকিছুতে ঝাল দেয়া হত। দেখতাম সবাই খাচ্ছে খুব সর্তকতার সাথে। কারণ মা বাবা এবং ছোটো বোনের বেশী ঝাল খাওয়ার অভ্যাস ছিল না। আমি ঝাল কমবেশীর তফাৎ বুঝতাম না।
আমার মায়ের কাপড় ধোয়ার বাতিক ছিল। অন্ততঃ তখন আমি মনে করতাম যখন তিনি আমার সামান্য ময়লা কাপড়ও ভার্সিটিতে যাওয়ার আগে ধোয়ে দিতেন। আমি খুব অবাক হতাম যখন তিনি রং বলে বলে আমার কাপড়-চোপড়ের কথা জিজ্ঞেস করতেন।আমার নিজেরই মনে থাকতো না কিন্তু উনার কিভাবে স্মরণ থাকতো ভেবে পেতাম না।
আসলে নাড়ীর সাথে যার সম্পর্ক সে তো সব জানবেই, সে তো ভাল বাসবেই! কিন্তু ভালবাসাটা আমরা অনেক দেরীতে বুঝতে পারি। এতটা দেরীতে যে, একটা অদ্ভূত দূরত্ব চলে আসে ভালবাসার প্রতিদান বুঝানোর জন্য।
আমার মত যারা চাপা সবাবের তারা কি করেন বা কিভাবে নিজের ভালবাসা তার মায়ের প্রতি প্রকাশ করেন জানি না, তবে আমি কোনো ভাবেই পারি না। শুধু চেষ্ঠা করি মাকে আমি কেন্দ্রিক কিছু টেনশন থেকে দূরে রাখতে। যেমন, আমি বাহিরে থাকলে বাসায় ফেরার সময় কখনই আমার মাকে বলতাম না আমি বাসায় আসছি। কারণ আমি জানতাম আমি বাসায় না ফেরা পর্যন্ত তিনি দুঃচিন্তায় থাকবেন।
কিন্তু আজ প্রবাসে বসে তা ও করতে পারছি না। আজও মায়ের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে রইলাম!
এর দ্বারা পোস্ট করা
suMon azaD (সুমন আজাদ)
লেবেলসমূহ:
কতকথা